মজলুমরা আল্লাহর আদালতে উত্তম বিচার পাবে ইনসা আল্লাহ : রাশেদ
ডাকসুতে লাইট দরজা বন্ধ করে হামলার পরেও তেমন কোন প্রতিবাদ হলো না, মূল অপরাধীদের গ্রেপ্তার করা হলো না। আবরার হ’ত্যা পরে মনে করেছিলাম, এই দেশে এমন নিষ্ঠুর ঘটনা আর কোনদিন ঘটবেনা। কাউকে এভাবে রড- বাশ দুয়ে পে’টানো হবেনা। কিন্তু ঘটনার কিছুদিন পরেই আবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন ঘটনা ঘটলো। তাও আবার ডাকসুর ভিপির রুমে। সেদিন কি ঘটেছিলো তা একমাত্র আমরাই জানি। আবরার ম’রে গেছে, তাই খু’নীদের আটক করা হয়েছে, আমরা মরিনি বলে তাদের বিচার করা হবেনা, আটক করা হবে না। এই হলো আমাদের দেশের বি’চার ব্যবস্থা! অপরাধীদের আইনের আওতায় না এনে আরও বড় অপরাধ করার সুযোগ করে দেওয়া হলো। আরও ভয়ংকর হওয়ার সুযোগ করে দেওয়া হলো।
সত্যি খুব কষ্ট লাগে। ১৯৭১ সালে কি হয়েছে দেখিনি, তবে ৭১- এর ভয়াবহতার ইতিহাস পড়েছি, সিনেমাতে দেখেছি। একটা দেশ এতো রক্তের বিনিময়ে স্বাধীনতা অর্জন করলো, সেই দেশে এমন ব’র্বরতা, হিং’স্রতা, হানাহানি, রেষারেষি থাকবে, এটা যদি মুক্তিযো’দ্ধারা জানতো তাহলে হয়তো কেউ যুদ্ধে যেতো না, দেশ স্বাধীন করতো না।
৩০ লক্ষ মানুষের জীবন, ২ লক্ষ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে কি পেলাম আমরা? শুধু একটা ভূখণ্ডের জন্য এতো মানুষের জীবন কেন দিতে হলো, যদি প্রকৃত স্বাধীনতা না পাবো? মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক ন্যায়বিচার কোনকিছু আছে বাংলাদেশে?
আজকে সমালোচনা করার কোন জায়গা আছে? আছে বাকস্বাধীনতা? ডাকসুতে দরজা- লাইট বন্ধ করে হা’মলা করার হয়েছে তো সমালোচনার জন্যই?
তাহলে কোথায় আমার স্বাধীনতা, কোথায় সাম্য, কোথায় মানবিক মর্যাদা, কোথায় ন্যায়বিচার?
যারা এগুলো করছেন, নিজের বিবেককে একবার প্রশ্ন করেন তো ভিন্নমত দমনে এমন হিংস্রতা কি কোন রাজনীতি?
পাকিস্তানিরা আমাদের মতামতকে দমন করতে বর্বরতা চালিয়েছে, স্বাধীনতার পরেও যদি বাংলাদেশে এসব চলে তাহলে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়ে লাভ কি হলো?
ভিন্নমতের রাজনীতি দমন করতে তো পরিচ্ছন্ন রাজনীতিই যথেষ্ট। আপনি ভাল কাজ করলে জনগণকে সেটা বোঝান। জনগণ যদি মনে করে আপনারা বা আপনি ভাল কাজ করছেন, তবে আপনার বিরুদ্ধে কেউ কথা বললে জনগণ সেটা প্রতিরোধ করবে, ভিন্নমতকে রাজনৈতিকভাবে ভুল প্রমাণ করতে জনগণ মাঠে নামবে, নিজেদের রাজনৈতিক সংগঠনের লোকগুলোকে দিয়ে লাইট-দরজা বন্ধ করে নিষ্ঠুর হা’মলা চালিয়ে ভিন্নমতকে প্রতিরোধ করা লাগে?
একদিন সকলকে ম’রতে হবে। সবকিছুকে আপনি অস্বীকার করতে পারলেও মৃ’ত্যুকে পারবেন না।
আর যাকে বা যাদেরকে আপনি মা’রতে চান, আপনি চাইলেই তারা মা’রবে? সৃষ্টিকর্তার হুকুম ছাড়া পৃথিবীতে কারও মৃ’ত্যু হবেনা, আপনি যে ধর্মের লোকই হন না কেন, এটা নিশ্চয়ই আপনি বিশ্বাস করেন। আপনি হয়তো হত্যা চেষ্টা চালাতে পারেন, কিন্তু মৃ’ত্যু কপালে লেখা না থাকলে, মৃ’ত্যু হবেনা।
পরিশেষে বলতে চাই, দুনিয়ায় আদালতে মুক্তি পেলেও, এই হা’মলার জন্য পরকালের আদালতে কেউ বিন্দু পরিমাণ ছাড় পাবেন না। মজলুমরা আল্লাহর আদালতে উত্তম বিচার পাবে, ইনশাআল্লাহ।